এগার অক্টবর চাঁনরাত । প্রচন্ড ঠান্ডা লাগসে , নাক = ওয়াসার ট্যাপ, আর মিনিটে ১৭টা কইরা হাঁচি। দেশের থিকা এ্যলাট্রল আনসিলাম ভাবছি ওটা দিয়াই ট্রিটমেন্ট চালামু। আমার কাহিল অবস্থা দেইখা আমার পোলিশ দুস্তরা কইলো
- দুস্ত আমগো এইখানে "টেরাফ্লু" নামের এক ভালো ওষধ আছে , রাইতে খাইবা পারদিন সকালে ১০০ মিটার রেসের টুর্নামেন্টে অংশগ্রহন করবার পারবা।
কালকে ঈদ সো কোন চিন্তা না করেই রাজি হইলাম। হাতমোজা , কানটুপি, জ্যাকেট পইড়া রাস্তায় নামলাম একা। রাত সাড়ে নয়টা বাইরে ৩ ডিগ্রী টেম্পারেচার। কোন পোলিশ কুত্তাও নাই রাস্তায়। কাঁপতে কাঁপতে ৩০০ মিটার দুরে দোকানে হাজির হইলাম । এমুন কপাল আমার গিয়া দেখি দোকান বন্ধ। দোকানের বাইরে ২টা পোলা বইসা বিয়ার টানতাসে। অহন কি করুম চিন্তা করতাসি, এমুন সময় আইলো ম্যাসেজ। আমার এক দুস্ত ম্যাসেজ পাঠাইসে হের লাইগ্গা এক প্যাকেট মার্লবোরো কিনা নিয়া যাইতে। ওষধের দুকান বন্ধ মাগার বিড়ির দুকান ঠিকই খোলা পাইলাম।
বিড়ি কিন্না বাইর হইয়া একটু দূরে আসতেই এক পোলা বয়স ২৪/২৫ টুপিওয়লা জ্যাকেট পড়া হাতে বিয়ারের বোতল, ডাক দিয়া জিগাইলো - কয়টা বাজে ?
চিনলাম ব্যাটারে ওষধের দোকানের সামনে বইসা ছিল একটু আগে।
টাইম কইয়া হাটা দিলাম , দেখি ব্যাটাও আমার লগে হাটা দিসে। আমার সাথে মুবাইল, আইপড, আর অল্প কিছু টাকা ।
টের পাইলাম কেইস খারাপ। দুম করে ইউটার্ন মারলাম। ব্যাটা কয়
- কই যাও ?
- বিড়ি কিনুম
আবার ঢুকলাম দোকানে, ব্যাটা বাইরে দাড়ায় আছে। কি মুসিবতে পড়লাম। দিলাম পোলিশ দুস্তরে ফুন
- দোস্ত আমি বিপদের গন্ধ পাইতাসি , তুমি শীঘ্র আস। আমি ন্যাট্টোর কাছে এক বিড়ির দুকানে আছি।
- তাই নাকি ! চিন্তা কইরো না আমি আইতাসি।
- জলদি কর।
দোকানে আমি আর দোকানি এক বুড়ি । বুড়ি আমারে জিগায়
- আর কিসু নিবা ?
- চিন্তা করতাসি , একটু পরে কমুনে, ঠিকাছে?
এমুন সময় ঐ ব্যাটা দুকানে ঢুকলো। আরেক বোতল বিয়ার নিল। আমার কাছে আইসা কয়
- লও বাইরে গিয়া বাতচিত করি
- বাইরে ঠান্ডা , আমার শইল ভালা না এই দেখ আমার নাক দিয়া পানি পড়ে।
- আরে মিয়া লও ... বিয়ার খামু, বিড়ি টানুম বাতচিত করুম।
- তোমারে ধইন্যা পাতার ভর্তা । আমি বিয়ারও খাইনা বিড়িও টানিনা।
- আইচ্ছা তুমারে কিসু খাইতে হইবো না । মাগার গ্যাজাইতে তো সমস্যা নাইক্কা ।
- আসলে কাহিনি হইলো আমার কিসু দুস্ত আইবো এইখানে । হেগো লাইগ্গা ওয়েট করতাসি।
এইবার মনে হইলো ব্যাটা একটু চিন্তায় পড়সে । আবার দুকানের বাইরে গিয়া দাড়াইলো ।
দোকানি বুড়ি আমার দিকে তাকায় হতাশ ভাবে কইলো -
- এডি বদমাইশ পুলাপাইন।
আমিও মাথা নাইড়া জানাইলাম - হ আমি জানি ।
সত্য কথা হইলো আমি এট্টু ডরাইসিলাম। এই ব্যাটার লগে কুস্তিতে পাড়নের কুন সম্ভাবনা নাই আমার। এদিকে আমার দুস্তের কোন খবর নাই । আবার দিলাম ফুন ।
- আরে ব্যাটা তুই কই !
- এই তো আইয়া পড়সি।
এমুন সময় ঘটল আজব ঘটনা, ঐ ব্যাটা উল্কার বেগে দোকানে ঢুইকা আমার মুবাইলে দিল থাবা। মুবাইল হাত থিকা ছিটকা গেল কাউন্টারের ঐপাশে । আমি তো ঘটনায় পুরা টাসকি !!!
ব্যাটা রে এক ধাক্কা দিয়া আমিও দিলাম লাফ কাউন্টারের পিছে।
দোকানি বুড়ি তখন চিল্লাইয়া ঐ ব্যাটারে কইলো
- আমি পুলিশ মামুগোরে ফুন দিতাসি তুই এক্ষুনি আমার দুকান থিকা বাইর হ ।
ব্যটা আর দেরি না কইরা আমার দিকে কড়া চোখের রাঙানি দিয়া দিল দৌড়।
বুড়ি আমারে কইলো
- বাছা চিন্তা কইরো না আমি মামুগো রে ফুন দিতাসি । ২ মিনিটের ভিতরে মামুরা আইসা পড়ব।
আমি নার্ভাস ভাবে কইলাম
- জিংকুইয়া বার্জো (আপনেরে ধইন্যা পাতার ভর্তা)
এমুন সময় আমার দুই পোলিশ দুস্ত জিবি আর সিবাস্চেন ময়দানে হাজির হইলো । হেরা ঘটনা শুইন্না কয় -
- হালার পুতে কই !!! আমগো দেশের রেপুটেশন তো ধুলায় মিশাইয়া দিল !! হালারে আইজকা খাইসি !!
আমি আবারও নার্ভাস হাসি দিয়া কইলাম
-হে তো ফুটসে।
আমার দুস্তরা দুঃখিত হইয়া আমারে কইলো
- দুস্ত .. কিসু মনে কইরো না । তুমি তো জানো ভালো-খারাপ সব খানেই আছে। মনে কষ্ট নিও না ।
- আরে নাহ ব্যাপার না । খারাপ পুলাপাইন সব খানেই আছে।
এরপর মামুরা আইলো , আমার মুখ থিকা সব শুনলো। আমারে জিগাইলো কালপ্রিট টারে দিখলে চিনতে পারুম কিনা ?
কইলাম - আবার জিগায় !
মামুরাও দুঃখ প্রকাশ করলো । এবং আমারে কইলো লও তুমারে নামায় দিয়া আসি। আমি কইলাম তুমাগোরে নামায় দিতে হইবো না আমি আমার দুস্তগো লগে যামু সমস্যা নাইক্কা। হেরা কিসুতেই মানবো না , এইডা বলে হেগো ডিউটি।
অগত্যা উঠলাম মামুগো গাড়িতে। এমুন গাড়িতে জন্মেও উঠি নাই । শক্ত ফাইবারের সিট, দরজায় কোন নব নাই। , সামনে পিসে পুরা সিল করা । কারো সাধ্য নাই এইডার ভিতরে কোন তাফালিং করার।
মামুরা আমার রুম পর্যন্ত পৌছায় দিল।
আর আমার ঠান্ডা !
এই ঘটনার পরে ঠান্ডা আরও বাইরা অবস্থা হালুয়া টাইট । ঈদের দিন বাসার সাথে চিঁ চিঁ কন্ঠে কথা কইতে হইসে ।
(বাসায় কইলাম এই ঘটনা জানাই নাই)
No comments:
Post a Comment